প্রয়োজনে ‘আঙুল বাঁকা করার’ হুমকি জামায়াতের

প্রকাশঃ নভেম্বর ৬, ২০২৫ সময়ঃ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ.. সর্বশেষ সম্পাদনাঃ ৪:৫৫ অপরাহ্ণ

প্রতিক্ষণ ডেস্ক

জামায়াতে ইসলামী’র নায়েবে আমির সৈয়দ আব্দুল্লাহ মো. তাহের বলেছেন, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট আয়োজন নিশ্চিত না হলে দরকার হলে ‘আঙ্গুল বাঁকা’ করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হবে। পল্টন মোড়ে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত সমাবেশে তিনি বলেন, তাদের দাবি আদায়ের পন্থা সময়ের সঙ্গে খাপ খাইয়ে বদলানো হবে—“সোজা আঙুলে ঘি না উঠলে আঙুল বাঁকা করবো; কিন্তু ঘি আমাদের লাগবেই।”

তার বক্তৃতায় তিনি বলেন, জামায়াত এখনো নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে, তবে কর্তৃপক্ষের ‘চালাকি’ বুঝে দাবি আদায়ে রূপান্তর দরকার হলে সেটাও করবে দল। তিনি আরো বলেন, “নো হাঙ্কি-পাঙ্কি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট লাগবেই।”

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন, নভেম্বরে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে পল্টন মোড়ে আট দলের নেতাকর্মী এদিন সমবেত হন। স্মারকলিপি প্রধান উপদেষ্টাকে প্রদান করার উদ্দেশ্য নিয়ে আয়োজিত ওই সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তাহের অভিযোগ করেন যে, গত কয়েক মাসে আন্দোলন থেমে যায়—তবু দ্রুত আবার রাজপথে নামতে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা রাজপথে এসেছি; প্রয়োজনে রক্ত দেব, প্রয়োজনে জীবন দেব; কিন্তু জুলাই বিপ্লবকে ব্যর্থ হতে দেব না।”

জুলাই সনদকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার উদ্দেশ্য উল্লেখ করে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন এবং বলেন, “ষড়যন্ত্রকারীদের পরাজয় হবে; জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দেওয়া হবে—ইনশাআল্লাহ।” বিএনপি ও অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দলের সঙ্গে গণভোট আয়োজনের সময়সূচি নিয়ে মতবিরোধ থাকার কথাও তিনি স্বীকার করেন। এ প্রসঙ্গে জামায়াত বলেন, সময়ক্ষেপণ রাজ্য বিরুদ্ধ কাজ করবে—গণভোট জাতীয় নির্বাচনের আগে আয়োজিত হবে বলে তাদের অবস্থান।

তাহের বলেন, যদি কেউ বলেও যে একদিনে গণভোট আয়োজন করলে “অনেক টাকা” লাগবে, তখন তিনি তেজস্বী প্রতিহত করেন—একদিনের চাঁদাবাজিতেই একটি গণভোট আয়োজিত হওয়ার যোগ্য অর্থ তোলা সম্ভব। তিনি সার্বিকভাবে সরকারকে ও চাঁদাবাজিতে যুক্তদের উদ্দেশ্য করে বলেন, এসব বন্ধ করলে গণভোট আয়োজনের জন্য সম্পৃক্ত অর্থের ঘাটতি হবে না।

তিনি পুনরায় বলেন, জামায়াত শান্তি ও সমাধান চান; জাতীয় নির্বাচন এবং জুলাই সনদ বাস্তবায়ন চান। আলোচনার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তিনি সরকার ও অন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান এবং বলেন, জামায়াত আলোচনার জন্য দুই সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে—অন্য দলগুলোকেও কমিটি ঘোষণার আহ্বান জানানো উচিত।

বুধবার উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠকে এক সপ্তাহে ‘ঐক্যবদ্ধ দিকনির্দেশনা’ চাওয়া হলেও, তাহের বলছেন সময়ক্ষেপণ করা হলে আগামী ১১ নভেম্বর ‘চলো ঢাকা চলো’ কর্মসূচি পালন করবে তারা। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে জানান, “১১ তারিখ ঢাকা মহানগরী হবে জনতার নগরী, দাবি আদায়ের দিন।”

জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নভেম্বরের মধ্যে গণভোট আয়োজন করে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি প্রদান করতে হবে; তা না হলে সরকারের অর্জিত সম্মান ও মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হবে। এদিন পল্টনে মিছিল করে যোগ দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি ইসলামপন্থী ও ঐতিহ্যবাহী দল—যেখানে তারা শৃঙ্খলা বজায় রেখে যমুনা অভিমুখে যাত্রা করবে বলে জানান।

তারা বলেন, আসন্ন নির্বাচনকে অবাধ, নিরপেক্ষ ও সচ্ছ করার লক্ষ্যে—and দেশের সামরিক ও রাজনৈতিক কাঠামো পরিবর্তন করে—নতুন রাষ্ট্র কাঠামো গঠনের দাবিও তাদের পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত।

আরো সংবাদঃ

মন্তব্য করুনঃ

পাঠকের মন্তব্য

20G